স্বদেশ ডেস্ক: রাজ-রাজাদের সম্পত্তি। রাজকীয় হবে তাতে সন্দেহ নেই। আর যদি কথা ওঠে হায়দরাবাদের নিজামদের, তাহলে তো কথাই নেই। বৈভব বলুন। নাম বলুন। গয়নাগাটি, যাই বলুন। সবেতেই একশোয় একশো পাবে হায়দরাবাদের নিজাম পরিবার। ২০১৯ সালেও সেই একই জাঁকজমক। এতটুকু ঝুল ঝরেনি প্রতিপত্তিতে। বুধবারের একটি ব্রিটিশ আদালতের রায় তেমন কথাই বলছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৯৪৮ সালে দায়ের করা মামলায় জিতেছে নিজামরা। যার জেরে হায়দরাবাদের নিজাম পরিবারের অ্যাকাউন্টে ঢুকতে চলেছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি পাউন্ড।
সালটা ১৯৪৭। হায়দরাবাদের নিজাম পরিবারে রাজ করছেন সপ্তম নিজাম মীর ওসমান আলি খান। তখন সেই নিজামের মাথা ব্যথা তাঁর বিপুল সম্পত্তি নিয়ে। স্বাধীনতার পর যদি হায়দরাবাদ পাকিস্তানের অংশে ঢুকে যায়, তাহলে এই বিশাল সম্পত্তির হবেটা কী? সেই চিন্তা থেকেই মীর ওসমান আলি খান এক সপ্তাহের জন্য তখন লন্ডনে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে দশ মিলিয়ন পাউন্ড দিয়েছিলেন। যা ওই দূত লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকে গচ্ছিত রাখেন। টাকা নেওয়ার সময় কোনও সমস্যা করেনি পাকিস্তান। কিন্তু ফেরৎ দেওয়ার সময় ওই রাষ্ট্রদূত জানান, নিজাম ওই অর্থ দান করেছেন পাকিস্তানকে।
স্বাধীনতার পর হায়দরাবাদ ভারতেই থাকলে নিজাম লন্ডনের একটি আদালতে পাকিস্তানের নামে মামলা করেন। দাবি একটাই, ‘টাকা ফেরত দাও।’ পরে নিজামের দুই বংশধর ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে ওই অর্থ উদ্ধার করতে যেতে, বাধ সাধে পাকিস্তান সরকার। এই নিজাম পরিবারের একটি নেকলেস রানির গয়নার সংগ্রহে অন্যতম সেরা। এখনও বিয়ের অনুষ্ঠানে যা পরেন রাজ-পরিবারের বধূরা। ১৯৪৮ সালে নিজামদের রাজ্য দখল করে ভারত সরকার। পরবর্তী কালে নিজামদের সঙ্গে বন্ধুত্বও স্থাপন করে তারা। এই আইনি লড়াইয়ে নিজামদের সমর্থন করে নয়াদিল্লি। ১৯৪৮ সালের সেই মামলার রায় বেরিয়েছে বুধবার। তাতেই জানা গিয়েছে, ওই দশ লক্ষ পাউন্ড আসলে শেষ নিজামের। এবং সেই অর্থই সুদে বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে সাড়ে তিন কোটি পাউন্ডে।